"দুষ্টের বিদায়ের দিনে"
মাগরিবের আজান কর্ণকুহরে প্রবেশের সাথে-সাথে মাথিনের হৃদয়ের বাম নিলয় ও অলিন্দের মাধ্য দিয়ে শীতল রক্ত বয়ে গেলো। অদ্ভুৎ এক সতেজতা অনুভব হচ্ছে। কেন এই সতেজতা? কারণ জানার কৌতূহল জাগলো তার মনে, তবে সে তার এই কৌতূহলকে দূরে সড়িয়ে রাখলো। নামাজে যেতে হবে তো! খুশি মনে, প্রফুল্লতার সাথে তার প্রিয় আতরটা লাগালো। আহ কি মিষ্টি সুঘ্রাণ! প্রতিবারই সে আতরের সুবাসকে বাহবা দেয় তার মিষ্টতার জন্য, এবারও দিলো। সন্ধ্যার আবহাওয়াও তার অনুভূত "শীতলতা"-কে গ্রহণ করে নিলো। শীতল হাওয়া বইছে, আলতো করে তার চোখের পাপড়িকে নাড়িয়ে দিয়ে গেলো। চোখ দু'খানার পলক পড়লো কয়েকবার। তবে সে এতে কোনো অস্বস্তি বোধ করছেনা। বরং তার শীতলতার অনুভূতি আরও জোড়ালো হচ্ছে।
সে আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলো রাতে আধার ধীরে ধীরে গ্রাস করছে সূর্যের আলোকে। মেঘ অন্ধকারের সঙ্গে সন্ধি করছে, সূর্য গেছে পৃথিবীর অন্য প্রান্তের মানুষদের ঘুম থেকে জাগাতে।
মাগরিবের নামাজেও সে শীতলতার ছোয়া পেলো। ফরজ শেষ হতেই তার মস্তিষ্কের নিউরনগুলো তাকে মসজিদ থেকে বের হওয়ার জন্য তাড়া দিচ্ছিলো। সে যেনো নিউরনগুলোকে শাসনের সুরে বলছে, "এত সাহস পেলি কোত্থেকে? হুহ!"
নিউরনগুলোও যেন কাপা কাপা কণ্ঠে বলছে, "আপনার নফসই আমাকে আদেশ করেছে।"
সে তার মস্তিষ্কের সংকেতকে অমান্য করে আবার ঢুকে পড়লো মসজিদে। খুব ধীরেসুস্থে দু রাকাত সুন্নত পড়লো। শেষ বৈঠকের পড় সালাম ফিরাচ্ছে, "আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ...." সাথে সাথেই সে আরেক দফা শীতলতা অনুভব করলো। আহ এমন যদি প্রতিনিয়তই হতো! হবেকি? হবে বোধহয়। হলে তো ভালোই লাগবে। প্রতিনিয়ত প্রবৃত্তির অনুসরণ করে হৃদয় বড়ো উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। তখন যদি এই শীতলতার পরশ পাওয়া যায়, কে-ইবা মানা করবে বলুন?
এবার সময় হয়েছে এই অনুভূতির পেছনের কারণকে খুঁজে বের করার করার। কারণতো তার জানাই আছে। ইচ্ছে করেই না জানার ভান ধরেছিলো। আমরা অনেক সময়ই কিছু জানা বিষয়কেও নিজের কাছে অজানা করে নেই। কেন এমনটা করি? হয়তো নতুন কোনো অনুভূতির খোঁজে! তবে আমরা কি সর্বদা সফল হই? না, তবে মাঝে মাঝেই সফলতার মুখ দেখি। এর উপর ভর করেই তো আমরা বেচে আছি।
আজ প্রথম রমাদান। এগারোটা মাস পড়ে আসলো সে। প্রতিবারই সে একটা সুখবর নিয়ে আসে, আর তা হলো– শয়তানের বিদায়। সবার বিদায়ে যে শুধু দুঃখী হতে হবে এমনটা নয়। কারও কারও বিদায় বয়ে আনে সুখের অনুভূতি। দুষ্টের বিদায়....
১ রমাদান, ১৪৪৪ হিজরী।
All reacti
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন