গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ এর মূল মাস্টারমাইন্ড হলো- "ইসলামি মূল্যবোধ"।





 "দেশ স্বাধীন করলাম আমরা
 দেশ চালায় এখন বামরা।"

 আসিফ মাফিতাব স্যার এর এ দুটি লাইন দিয়েই শুরু করলাম।

 এ গণঅভ্যুত্থান একদিনে সংগঠিত হয়নি। গত পনেরো/ষোলো বছরের অতুলনীয় বর্বরতার ফসল এই অনন্দের আগষ্ট। খুনি হাসিনার নির্যাতনের শিকার হয়েছে এ দেশের প্রতিটা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তবে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে কারা, জানেন?
-- হুজুররা, আলেমরা, ইসলামপন্থীরা।

 এই ফ্যাসিবাদের দ্বারা আক্রান্তদের তালিকায় ইসলামপন্থীদের সংখ্যা হবে সর্বাধিক। আপনারা এই ফ্যাসিস্টকে চিনেছেন এতদিন পর, আর হেফাজত চিনেছিলো ১৩ সালে। সঠিক সময়ে আমাদের বোধ হলে হয়ত আগষ্টের যায়গায় মে-তেই আমরা খুনির হাত থেকে রেহাই পেতাম। তখন ছিলেন আপনারা নিশ্চুপ।

 এরপরও ইসলামপন্থীরা কিন্তু দমে যায়নি। প্রতিটা অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে সর্বদা সোচ্চার থেকেছেন। প্রতিটা অন্যায় জুলুমের বিরুদ্ধে জুম্মা'র মিম্বর থেকে বয়ান হয়েছে। আমাদের ইসলামি মূল্যবোধ কে উজ্জিবিত রেখেছেন আলেমরা। যে ইসলামি মূল্যবোধ আমাদের শেখায় অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে। রাসুলুল্লাহ সাঃ এর হাদিস আমাদের শেখায়—
 "তোমাদের কেউ যদি অন্যায় কাজ দেখে, তাহলে সে যেন হাত দিয়ে এর সংশোধন করে দেয়। যদি এর ক্ষমতা না থাকে, তাহলে মুখ দিয়ে, যদি তাও সম্ভব না হয় তাহলে অন্তর দিয়ে (ওই কাজকে ঘৃণা করবে আর নির্মূলের ফিকির ও দোয়া করবে), আর এটিই ঈমানের নিম্নতম স্তর।" (মুসলিম-৮৩)

 এই ইসলামি মূল্যবোধের কারণেই ইসলামপন্থীরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করে গেছে নিজের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশংকা থাকার পরেও।

 গণঅভ্যুত্থান-২৪ এ যারা শরিক হয়েছে তাদের মাঝে ছিলো ইসলামি মূল্যবোধ। প্রত্যেকে এই মূল্যবোধকে সামনে রেখেই আন্দোলন করেছে। আমার পরিচিত অনেকেই আন্দোলনে ছিলো শুরু থেকেই, যাদের এই কোটা নিয়ে চিন্তা করার কোনো দরকারই ছিলো না। তবুও কেন আন্দোলনে গিয়েছে? অন্যায়ের প্রতিবাদের জন্য। যারা আন্দোলনে গিয়েছে, তারা এ নিয়তেই বাড়ি থেকে বের হয়েছেন যে "অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে যদি মৃত্য হয়, তবে আমি তো শহিদ।" অনেক মা-বাবা তাদের সন্তানকে যেতে দিয়েছেন কেন? এসব পরকালীন পুরষ্কারের কথা ভেবেই। পরকালীন পুরষ্কারের ধারণা না থাকলে আন্দোলনের মাঠ থাকতো শুন্য। এই শহিদ হওয়ার চিন্তা আমাদের মাথায় কেন এসেছে? এর পেছনেও রয়েছে ইসলামি মূল্যবোধ।

 আন্দোলনের প্রতিটা স্পটে স্পটে আজান হয়েছে, আজানের পরপর অজু হয়েছে, পানি না থাকলে তায়াম্মুম করেছে অনেকে। নামাজে দাঁড়িয়েছে কয়েকজন, আর কয়েকজন ছিলো তাদের সুরক্ষার জন্য। আবার একদলের নামাজ শেষ হলে ওই পাহারাদার বাহিনী দাঁড়িয়েছে নামাজে। গুলির আওয়াজের মাঝেই রব্বের প্রতি মাথা নত করেছে তারা।


 এরপরও কোনো গোষ্ঠী এসে যদি ইসলামপন্থীদের অবদানকে অস্বীকার করতে চায়, এসব মূর্খতা,ভণ্ডামি আর স্পষ্ট মিথ্যাচারীতা ছাড়া আর কি হতে পারে? ইসলামি মূল্যবোধ যতদিন থাকবে, সমাজে প্রতিটা জুলুমের বিপরীতে আওয়াজ উঠবে। দেশ চালাতে হলে ইসলামকে সর্বোচ্চ স্থানে রেখেই চালাতে হবে। ইসলামপন্থীদের মতামত বিহীন কোনো কাজ করার ধৃষ্টতা দেখাবেন না।


মন্তব্যসমূহ

Popular Posts

"তাওহীদ– আমার বেঁচে থাকার কারণ"

"রাতের আকাশ ও রবের মহিমা: এক গভীর উপলব্ধি"

"Rat Race" —বিপর্যস্ত আত্মার খোঁজে