"বাংলাদেশ, ডিপ স্টেট ও ইসলামপন্থীদের ভবিষ্যৎ করণীয়"
ডিপ স্টেটের চক্রান্ত ও মুসলিম
আইডেন্টিটির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র
ডিপ স্টেটের খেলার বলি হচ্ছে বাংলাদেশিরা। ভারত চাচ্ছে দ্রুত নির্বাচন হোক, বিএনপি এর মাঠপর্যায়ের কাজ আঞ্জাম দিচ্ছে। আর আব্বো আমেরিকা চাচ্ছে সংস্কারের নামে মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা, ধর্মীয় ইনক্লুসিভিটির দোহাই দিয়ে মুসলিমদের মনে খিলাফতের যে স্বপ্ন আছে, তা যেন ধীরে ধীরে নিউট্রাল হয়ে যায়।
৫ই আগষ্টের পড়ে ইসলামপন্থীরা যেভাবে গলা খুলে কথা বলেছে এবং সামাজিকভাবে যে স্বীকৃতি পেয়েছে, তা ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবে বাম-সেক্যুদের বয়ানের স্রোতে। আবারও ইসলামপন্থীদের ভিলেন বানানো হবে, কিন্তু এবার সময় নিয়ে খেলবে।
ইসলামপন্থীদের মূল চ্যালেঞ্জ ও শত্রুদের কৌশল
তথাকথিত সুশীল ইন্টেলেকচুয়ালরা এখনও বুঝতে পারছে না যে বাংলাদেশিদের একমাত্র শক্তি ইসলামী মূল্যবোধ। সুশীল শ্রেণীকে খুশি করতে সমন্বয়করাও মাঝে মাঝে তাদের পক্ষে কথা বলছে। এসব সুশীলরা একটা বয়ান তৈরি করতে চাচ্ছে যে 'এদেশের ইসলামপন্থীরা বোকা, তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতা নাই, তারা কিছু বোঝে না, তারা আবেগি....।'
এই সুশীলতার রোগে ইসলামপন্থীরাও আক্রান্ত হচ্ছে। শারিয়াহ এর কথা বলতে তারা ১০ বার ভাবেন। 'আব্বো মাইন্ড করবে কি না"— এই চিন্তায় তারা বিভ্রান্ত। যার ফলে ইসলামের বয়ান তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। এদেশে যত সমস্যা আছে, সকল সমস্যার সমাধান একমাত্র শারিয়াহ। এ জিনিস বুঝতে আমাদের যত দেরি হবে, ততই মজলুমদের ভোগান্তি বাড়বে।
এজন্য আমাদের ভবিষ্যৎ করণীয়—
১. আদর্শের প্রতি সুস্পষ্ট ধারণা:
প্রথমত, আমার আদর্শ সম্পর্কে আগে আমার পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে। এবং এই আদর্শ সমাজের প্রতিটা সমস্যার সমাধান কিভাবে করতে সক্ষম তা সকলের কাছে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় প্রকাশ করতে হবে।
২. সমাজের সমস্যার কারণ উদঘাটন:
সমাজের সমস্যাগুলোর কারণ উদঘাটন করতে হবে এবং এর সমাধানের উপায় যে একমাত্র শারিয়াহ তা উপলব্ধি করতে হবে। ইসলাম এবং শরিয়াহ কেবল ব্যক্তিগত আচরণের নীতিমালা নয়; এটি সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানও বটে। শরিয়াহ কীভাবে সমস্যাগুলো সমাধান দিতে পারে, তা সমাজে প্রতিটা স্তরে আলোচনা করতে হবে।
৩. বুদ্ধিবৃত্তিক প্রস্তুতি:
ইসলামের সমাধানগুলোকে আধুনিক এবং বৈজ্ঞানিক প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করতে হবে। যুক্তি, প্রমাণ এবং বাস্তব উদাহরণ দিয়ে দেখাতে হবে যে শরিয়াহ কেবল নীতিগত বিষয় নয়; এটি প্রগতির পথও মসৃণ করে।
৪. যুক্তিনির্ভর বয়ান তৈরি:
ইসলামপন্থীদের নিজেদের বয়ানকে মজবুতভাবে প্রচার করতে হবে। নিজেদের তা জোড়ালো ভাবে আঁকড়ে করতে হবে। এ দেশের সেক্যুলার বা বামপন্থী বয়ানের জবাব দিতে স্পষ্ট ভাষায় এবং তাদের ভাষার সাথে সামঞ্জস্য রেখে এগ্রেসিভলি তার পালটা জবাব দিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ধরণের সুশীলতা সামগ্রিক ভাবে কল্যাণ বয়ে আনবে না।
৫. সাধারণ মানুষের কাছে সহজ ভাষায় ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানো:
শরিয়াহর জটিল বিষয়গুলো সাধারণ মানুষের জন্য সহজবোধ্য করতে হবে। ইসলামের ছোট ছোট বিষয়ে নিজেদের মাঝে হানাহানি বা বিতর্ক না করে তাওহীদের প্রশ্নে সবাইকে এক সুতোয় বাঁধতে হবে।
এভাবে আমরা যদি সমাজের প্রতিটি স্তরে ইসলামের সমাধানগুলো তুলে ধরা যায়, তবে ইসলামী আদর্শের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং বাংলাদেশিরা তাদের আত্মপরিচয় নিয়ে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করবে, বিশ্বের সকল মোড়লদের চোখে চোখে রেখে কথা বলবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন