"তাওহীদ– আমার বেঁচে থাকার কারণ"
তাওহীদ অর্থ একত্ববাদ। আরও স্পষ্ট ভাবে বলতে গেলে– "সকল নকল খোদা (তথাকথিত সুপার পাওয়ার) কে পায়ের নিচে রেখে, অবনত মস্তকে আল্লাহর এক ও অদ্বিতীয় সত্তার ঘোষণা দেওয়াই তাওহীদ।"
• এই তাওহীদই মুসলিমদের বেচে থাকার রসদ। তাওহীদ ছাড়া কোনো মুসলিমের পরিবার, ব্যবসা, সমাজ ও রাষ্ট্র টিকে থাকতে পারে না।
আমি ব্যবসায় ইনসাফ বজায় রাখব কেন? ভেজাল থেকে মুক্ত থাকার আকাঙ্ক্ষা রাখব কেন?
– কারণ এটা তাওহীদের শিক্ষা। আল্লাহ আমায় তার আদেশ দিয়েছেন তাই।
আমি আমার রাষ্ট্রের ভূখণ্ড রক্ষা করব কেন?
– কারণ এটা তাওহীদের শিক্ষা। আল্লাহ আমায় তার আদেশ দিয়েছেন তাই।
• তাওহীদ ছাড়া এই ভূখণ্ডের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাওহীদ না থাকলে ৪৭ এ ভারতের পেটের ভিতরে থেকেও পূর্ব পাকিস্তান হতো না। আর তা না হলে বাংলাদেশও হতো না।
তাওহীদ না থাকলে ২৪ এ এসে ভারতের অঘোষিত অঙ্গরাজ্য বাংলাদেশকে আবার স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে আবিষ্কার করা যেত না।
সেনাবাহিনী প্রতিটা অপারেশনের আগে সম্মিলিতভাবে একটা দু'আ করে নেন। কেন? কারণ তাওহীদ ছাড়া সফলতা অর্জন অসম্ভব। মানুষ তার চেয়ে সুপিরিয়র কোনো সত্তার কাছে প্রার্থনা করতে চায়। তাঁর অনুকম্পা ও অভিভাবকত্ব চায়। আর সে সুপিরিয়র সত্তা একমাত্র এবং একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা।
• আমি জুলাইয়ে রাজপথে নেমেছি– একমাত্র তাওহীদের জন্যই। আমার তাওহীদ আমাকে শিক্ষা দিয়েছে জুলুমের প্রতিবাদ করতে৷ তাই ১৩ থেকে ২০,২১ হয়ে ২৪–এও আমরা রক্ত দিয়েছি। শাহাদাতের তামান্না ছাড়া, আল্লাহর জান্নাতের আশ্বাস ছাড়া– আমরা কিভাবে রক্ত দিতাম?
•মানুষ মাত্রই ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা চায়। ভবিষ্যতকে কেন্দ্র করেই আমাদের 'বর্তমান'। তাই আমাকে যদি ভবিষ্যতের এই নিশ্চয়তা নাই দেওয়া হয় যে, আমাকে একটা আরামের আবাসস্থল দেওয়া হবে– তাহলে আমার বেচে থাকার, পরিশ্রম করার, রক্ত দেওয়ার উদ্দেশ্যই বা কি?
আমার তাওহীদ আমাকে এই নিশ্চয়তা দেয়। আমার রব্ব আমাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে বলেন–
"আল্লাহ মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন নারীদের জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন, যার তলদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত। সেখানে তারা স্থায়ীভাবে থাকবে এবং তারা থাকবে চিরস্থায়ী জান্নাতের মনোরম বসতিতে। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি তো সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। এটাই মহাসাফল্য।" [সূরা তওবা: ৭২]
কুরআনে বারবার বলা হয়েছে যে, যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। জান্নাত চিরস্থায়ী শান্তির স্থান, যেখানে থাকবে সুখ, শান্তি ও আল্লাহর সন্তুষ্টি।
এই জান্নাতের জন্য যে শর্তগুলো আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন, তা পূরণের জন্যই আমার বেচে থাকা। এই মহাসাফল্যের জন্যই আমি দুনিয়াতে ইনসাফের আচরণ করছি, ভালো কাজ করছি, আল্লাহর ইবাদত করছি।
• শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন: “তাওহীদই হচ্ছে ইসলামের ভিত্তি, এটি ছাড়া ইসলামে প্রবেশ করা যায় না।”
তাই মুশরিক ছাড়া কারও তাওহীদ নিয়ে কোনোপ্রকারের মক (Mock) করার সুযোগ নেই।
• দেশ ও সমাজের শৃঙ্খলা বজায় থাকার পেছনে একমাত্র কারণ এই তাওহীদ। আমরা তাওহীদকে ভালোভাবে পালন করি না দেখেই পত্রিকার শিরোনামে ইভটিজিং, ধর্ষণ ও হত্যার মতো বিষয় উঠে আসে। চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাজির জ্বালায় অতিষ্ট থাকে জনগন। যদি চান দেশে হত্যা, ধর্ষণ, হানাহানি বন্ধ হোক– তাহলে তাওহীদকে ভালোভাবে আঁকড়ে ধরুন।
১১ শাবান, ১৪৪৬ হিজরী।
মানুষ তার চেয়ে সুপিরিয়র কোনো সত্তার কাছে প্রার্থনা করতে চায়- Universal Truth.
উত্তরমুছুনYes.
মুছুন