"উর্দুর সাথে আমার সম্পর্ক"
میرے اس جسم میں اِک روح ہے
جو گناہوں کی آگ میں جل کر راکھ ہو گئی
دل تھا کبھی آئینہ، چمکتا تھا نور میں
اب تو بس دھول میں لپٹ کر خاک ہو گئی
Mere is jism mein ik rooh hai
Jo gunahoon ki aag mein jal kar raakh ho gayi
Dil tha kabhi aaina, chamakta tha noor mein
Ab to bas dhool mein lipat kar khaak ho gayi
–21 Ramadan, 1446।
• উর্দু এই ভূখণ্ডেরই একটা ভাষা, আমার পূর্বপুরুষদের ভাষা, আমার প্রিয় ভাষাগুলোর মাঝে অন্যতম। মাতৃভাষার সাথে তুলনা টেনে নিজের চিন্তার অপরিপক্কতার প্রমাণ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বাংলার সাথে উর্দুর দ্বন্দ্ব কখনোই ছিল না, ৫২ তেও না। ৫২ ছিল বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ের আন্দোলন। কিন্তু কিছু শ্রেণি আছে, যারা উর্দুকে বিরোধী ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। উর্দু নিয়ে তাদের আপত্তি আছে যাদের– বাংলা ভাষার কেবলা পশ্চিমবঙ্গ, সংস্কৃত যাদের কাছে বাংলার বাপ।
আর তারাই বাংলায় প্রচলিত বহু উর্দু শব্দকে ‘বিদেশি শব্দ’ বলে অপাংতেয় করেছে। অথচ ভাষা কখনোই সংকীর্ণ নয়; এটি বহমান নদীর মতো, যা বহু উৎস থেকে উপাদান সংগ্রহ করে নিজেকে সমৃদ্ধ করে।
আমার নানা ৮৫ বছর বয়সী একজন বিজ্ঞ ব্যক্তি, ২০০০ সালে রিটায়ার্ড করা প্রাইমারি স্কুলের হেডমাস্টার। এখন তিনি শয্যাশায়ী, তবে জ্ঞান আহরণের আগ্রহ এখনো কমেনি। তিনি যখন হাটতে পারতেন, তখন ছিলেন একজন 'জোয়ান তালিবুল ইলম'। উর্দু তিনি সাবলীলভাবে লিখতে, বলতে পারেন। আজও তিনি উর্দু চর্চা করেন। কেন?
এটি পাকিস্তানের ভাষা বলে?
যারা এভাবে ভাবেন, তারা নিজের মস্তিকে জমাট বেঁধে থাকা কালচারাল হেজেমনি ও পচনশীল দর্শনকে পরিষ্কার করার পেছনে মনোযোগী হোন।
তিনি উর্দু শিখতেন, বলতেন, লেখতেন। কারণ তিনি এই ভাষাকে নিজের করে নিতে চেয়েছেন। বাংলাতে তিনি কি কাঁচা ছিলেন? মোটেও না। তার বাংলা সাহিত্যের চর্চা দেখলে টিপিকাল বাংগুদেরও মাথা ঘুরাবে।
আমার বড় আব্বা– আমার বাবার নানা ও দাদা দুজনেই উর্দুতে পারদর্শী ছিলেন। বাবার দাদা ছিলেন গ্রাম প্রধান, যা থেকে আমার নামের শেষে প্রধান– তিনি তার কথার মাঝে উর্দু ব্যবহার করতেন। আমার আব্বুর নানা ছিলেন পুলিশ, যিনি ৯০ এর দশকে মৃত্যুবরণ করেছেন (وفات پا گئے Wafat pa gaye)। তিনি উর্দুতে 'বাত' করতে পারতেন অনর্গল। আমার দাদা, যিনি আমার প্রিয় মানুষদের তালিকায় ঊর্ধ্বে– তিনিও কিছু কিছু উর্দু জানতেন।
উর্দুর ডিলার একমাত্র পাকিস্তান না। উর্দু ভারতের অন্যতম সাংবিধানিক ভাষা এবং উত্তর প্রদেশ, বিহার, তেলেঙ্গানা, জম্মু ও কাশ্মীর, কর্নাটক এবং পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপকভাবে প্রচলিত।
ব্রিটিশ ভারতে উর্দু ছিল মুসলিম সমাজের অন্যতম প্রচলিত ভাষা, বিশেষ করে উত্তর ভারত ও বিহারের মুসলিমদের মধ্যে। ঢাকাসহ বাংলার কিছু অঞ্চলে উর্দুপ্রভাবিত সংস্কৃতি ও সাহিত্য বিদ্যমান
এই লেখায় কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর লুকায়িত রেখেছি আমার লেখা ও আপনার মস্তিষ্কের পরিচ্ছন্নতার মাঝে। এবার ভাবার সময় আপনার।
২৯ রমাদান, ১৪৪৬।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন